আমাদের সকলের শরীরেই ইউরিক অ্যাসিড রয়েছে। তবে তা স্বাভাবিকের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেলেই মুশকিল! সেক্ষেত্রে এই উপাদান ক্রিস্টাল হিসাবে পায়ের গাঁটে গাঁটে জমতে পারে। যার ফলে শুরু হয়ে যায় অসহ্য ব্যথা-যন্ত্রণা। তখনই হাঁটতে সময় সমস্যা হয়।
তবে এই অসুখ নিয়ে বেশি ভেবে বিপি বাড়াবেন না। বরং এ ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব কয়েকটি উপকারী সবজির শরণাপন্ন হন। তাতেই অনায়াসে সমস্যাকে কাবু করতে পারবেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
ভাবছেন নিশ্চয়ই, ঠিক কোন কোন সবজি রয়েছে এই তালিকায়? সেই উত্তর জানতে ঝটপট পড়ে নিন এই নিবন্ধটি।
আজকাল অনেকেই কুমড়ো খেতে চান না। আর এই ভুলটা করেন বলেই তাঁরা একাধিক পুষ্টি উপাদান থেকে বঞ্চিত হন। তাই শরীরের হাল ফেরাতে চাইলে আজ থেকেই এই সবজিকে ডায়েটে জায়গা করে দিন। বিশেষত, ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে তো কুমড়ো খেতেই হবে। কারণ, এতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন এবং লিউটিন নামক দুই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর এই দুই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। যার ফলে হ্রাস পায় ইউরিক অ্যাসিড। এমনকী গাউটের ব্যথাও কমে। তাই আজ থেকেই এই সবজির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে নিন।
অধিকাংশ বাঙালি এখনও মাশরুম খান। তবে এবার থেকে আর এই ভুলটা করবেন না। কারণ, অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার হলো মাশরুম। এতে রয়েছে বিটা গ্লুকান নামক একটি উপাদান যা কিনা ইউরিক অ্যাসিড লেভেল কমাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা-যন্ত্রণা কমানোর কাজেও এই উপাদানের জুড়ি মেলা ভার। তাই এই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা রোজের ডায়েটে এই খাবারকে জায়গা করে দিতে ভুলবেন না যেন!
আপনার শরীরের হাল হকিকত বদলে দিতে পারে পটলের মতো একটি উপকারী সবজি। এতে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজের ভাণ্ডার যেগুলি পুষ্টির ঘাটতি দূর করে। শুধু তাই নয়, এতে মজুত কিছু উপাদানের গুণে ইউরিক অ্যাসিডকেও সহজেই বশে রাখা যায়।
তবে পটল ভেজে খেলে এই উপকার পাবেন না। বরং এই সবজির তরকারি করে খান। কিংবা তা সিদ্ধ করেও খেতে পারেন। এই নিয়মে খেলেই হু হু করে কমে যাবে ইউরিক অ্যাসিড।
তবে এসব সবজি খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু নিয়ম মেনে চলুন।
ইউরিক অ্যাসিডকে বশে রাখতে চাইলে সবার প্রথমে পাঁঠার মাংস বা অন্যান্য ফাস্টফুড খাওয়া ছাড়তে হবে। এর পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ, কাঁকড়াও খাবেন না। সেই সঙ্গে মদ, বিশেষত বিয়ারের থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকুন। এর পাশাপাশি খাওয়া যাবে না কোল্ড ড্রিংকসের মতো মিষ্টি সমৃদ্ধ একটি পানীয়। আশা করছি, এ সব খাবার এবং পানীয়ের থেকে দূরে থাকলেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
এই সমস্যাকে বশে রাখতে চাইলে প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৩ লিটার জলপান করতে হবে। তাহলেই মূত্রের মাধ্যমে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীরের বাইরে বেরিয়ে যাবে। তবে কিডনির রোগ থাকলে আবার নিজের বুদ্ধিতে জলপান বাড়াবেন না। এই ভুলটা করলে উপকার তো মিলবেই না, উল্টে শরীরের ক্ষতি হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, অনেক সময় শুধু ডায়েটে বদল এনে সমস্যাকে বাগে রাখা যায় না। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তাঁর পরামর্শ মেনে ওষুধ খান। নইলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।
Leave a Reply