মে মাস শুরু হতে না হতেই ২৫ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রাজ্যের স্কুলগুলোতে। ইতিপূর্বে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে ২০১৬ সালে নিযুক্ত সমস্ত শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা হয়েছিল, আর এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেও সুপ্রিম কোর্টের তরফ এখনও পর্যন্ত কোনো রায় দেওয়া হয়নি। কিন্তু ইতিমধ্যেই মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশিত হয়েছে এবং একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির প্রক্রিয়াও কার্যকর করা হয়েছে, আর তাতেই মুশকিলে পড়েছে বহু সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী। এমনকি শিক্ষকের অভাবে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির প্রক্রিয়া বন্ধ পর্যন্ত করা হয়েছে, এমন নজিরও উঠে এসেছে।
শিক্ষকের অভাবে ভর্তি বন্ধ: শিক্ষকের অভাবে বন্ধ হয়েছে একাদশ শ্রেণীর ভর্তির প্রক্রিয়া। আজ্ঞে হ্যাঁ, এমনই এক নোটিশ প্রকাশ করা হয়েছে বীরভূমের এক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে। বিগত ২ রা মে ২০২৪ তারিখে বীরভূমের জাজিগ্রাম সর্বোদয় আশ্রম উচ্চ বিদ্যালয়ের তরফে একটি বিশেষ নির্দেশিকা মারফত বিদ্যালয়ের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক এবং এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছে যে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।
উক্ত নোটিশে ভর্তির প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার কারণ হিসেবে মূল যে বিষয়টিকে উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো, শিক্ষকের অভাব। এক্ষেত্রে আরও জানানো হয়েছে যে, West Bengal Council of Higher Secondary Education -এর ডেপুটি সেক্রেটারির সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থাৎ শুধুমাত্র শিক্ষকের অভাবে চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে উক্ত স্কুলের একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে। আর এই নোটিসকে কেন্দ্র করে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে অভিভাবকদের মধ্যে রীতিমতো ক্ষোভের সঞ্চার ঘটেছে।
ছাত্র-ছাত্রীদের আশঙ্কা: বীরভূমের জাজিগ্রাম সর্বোদয় আশ্রম হাইস্কুলের তরফে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশিকা জারি করা হলে তাতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে রীতিমতো ভয়ের সঞ্চার ঘটেছে। সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং পরবর্তীতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে তার আশায় দিন গুনছে ছাত্র-ছাত্রী তথা অভিভাবকেরা।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভান্ডারের মে মাসের টাকা দেওয়ার তারিখ জানালো রাজ্য সরকার।
বর্তমানে শিক্ষকদের চাকরি বাতিলের রায়কে কেন্দ্র করে ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের মধ্যে আশঙ্কা বাড়ছে। অনেকেই মনে করছেন আগামী দিনে অন্যান্য স্কুল গুলিতেও এই একই সমস্যা দেখা যাবে। শুধু তাই নয়, রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করার কারণে আগামী দিনে স্কুলগুলির পঠন-পাঠনের উপরেও প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।