বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে ভারতে বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষেরই কোনো না কোনো ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আর ডিজিটালাইজেশনের দৌলতে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রয়োজনীয়তা আরো অনেকাংশেই বেড়েছে। কিন্তু যেকোনো ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট ওপেন করতে গেলেই সেভিংস অ্যাকাউন্ট নাকি কারেন্ট অ্যাকাউন্ট কোনটি আপনার জন্য অধিক সুবিধাজনক তা জানাটা ভীষণভাবে প্রয়োজন নতুবা লেনদেনের ক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আর তাই আজ আমরা এই পোস্টে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট এবং সেভিংস অ্যাকাউন্টের পার্থক্য, কোনটির ক্ষেত্রে কি কি সুবিধা পাওয়া যায় এবং কোন অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ কত টাকা জমা করা যায় তা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।
কারেন্ট অ্যাকাউন্ট এবং সেভিংস অ্যাকাউন্টের পার্থক্য –
১. কোনো ব্যাংকের আওতায় সেভিংস অ্যাকাউন্ট ওপেন করা হলে উক্ত ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে ওই অ্যাকাউন্টে জমাকৃত রাশির উপরে ৩ শতাংশ থেকে শুরু করে ৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। সুতরাং, সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করার মাধ্যমে আপনি বাড়িতে বসেই বেশ কিছু টাকা উপার্জন করে নিতে পারবেন। কিন্তু কারেন্ট অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করা হলে সেই টাকার উপরে কোনোপ্রকার সুদ প্রদান করা হয় না।
২. সেভিংস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রতি মাসে কত টাকা লেনদেন করা সম্ভব না ব্যাংকের তরফে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু কারেন্ট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করার কোনো নির্ধারিত সীমা নেই।
আরও পড়ুন – এপ্রিল মাসে একদিন অতিরিক্ত ছুটি পেতে চলেছে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা। কবে কি কারনে ছুটি জেনে নিন।
৩. সেভিংস অ্যাকাউন্টের অধীনে নূন্যতম অর্থরাশি জমা রাখা আবশ্যক কিন্তু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে জিরো ব্যালেন্স সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলাও সম্ভব। অন্যদিকে, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ওপেন করা হলে সেই অ্যাকাউন্টের আওতায় নূন্যতম অর্থরাশি রাখা বাধ্যতামূলক, যদিও এক্ষেত্রে কত টাকা জমা রাখতে হবে তা উক্ত ব্যাংকের তরফে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়ে থাকে।
৪. কারেন্ট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে একেবারে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থরাশির বিনিময় করা সম্ভব, আর তাই ফার্ম, কোম্পানি, কর্পোরেট সেক্টর -এর মতো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি কারেন্ট অ্যাকাউন্টকেই বেছে নেয়। কিন্তু যারা নিজেদের প্রয়োজনে স্বল্প পরিমাণ অর্থরাশি সঞ্চয়ের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রাখতে চান তাদের জন্য সেভিংস অ্যাকাউন্ট আবশ্যক।
৫. সেভিংস অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তিরা সাধারণ বীমা এবং জীবন বীমার সুবিধা পেয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি লকার ব্যবহারের সুবিধাও পেয়ে থাকেন। অন্যদিকে, কারেন্ট অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তিরা ড্রাফটের মাধ্যমে খুব সহজেই অর্থ জমা করা অথবা স্থানান্তর করার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন – ইন্টারনেট ছাড়াই কলের মাধ্যমে UPI Payment করুন এক নিমেষে। রইলো পদ্ধতি।
সেভিংস অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ কত টাকা জমা রাখা সম্ভব – মূলত সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করার ক্ষেত্রে টাকার অংকের কোনো ঊর্ধ্বসীমা জারি করা হয়নি। তবে আয়কর দপ্তরের নিয়ম অনুসারে, সেভিংস অ্যাকাউন্টে একটি নির্দিষ্ট অংকের চেয়ে বেশি টাকা রাখা হলে আয়কর দপ্তরকে নির্দিষ্ট আয়ের উৎস সম্পর্কে জানাতে হবে।
কারেন্ট অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ কত টাকা জমা রাখা সম্ভব – রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার নিয়ম অনুসারে, কারেন্ট অ্যাকাউন্টে একজন ব্যক্তি তার ইচ্ছা অনুসারে টাকা জমা রাখতে পারবেন।
আপনার জন্য কোন অ্যাকাউন্ট সুবিধাজনক – প্রসঙ্গক্রমে জানিয়ে রাখি যে, যেসমস্ত ব্যক্তিদের প্রত্যেক মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় রয়েছে এবং যারা নিজেদের এবং নিজেদের পরিবারের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে উৎসুক তাদের জন্য সেভিংস অ্যাকাউন্ট পারফেক্ট। এমনকি যারা স্যালারি অ্যাকাউন্ট ওপেন করতে চাইছেন তাদের জন্যও সেভিংস অ্যাকাউন্ট আবশ্যক। অন্যদিকে, বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি, কর্পোরেট সেক্টর, প্রাইভেট সংস্থা, ফার্ম, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান অথবা যেসমস্ত ব্যক্তিরা ব্যাংকের মাধ্যমে যথেষ্ট টাকার লেনদেন করে থাকেন এবং কোনোরকম সীমা ছাড়াই লেনদেনে ইচ্ছুক তাদের জন্য কারেন্ট অ্যাকাউন্ট একেবারে পারফেক্ট।