সময়ের সাথে সাথে সমগ্র ভারতব্যাপী নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য ক্রমাগত হারে বাড়ছে। যার জেরে দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্র থেকে শুরু করে আপামর ভারতবাসীর রান্নাঘরে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসপত্রের জোগান দিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মধ্যবিত্ত। আর এই পরিস্থিতিতে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফ এমন Annuity Deposit Scheme লঞ্চ করা হয়েছে যার মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করলেই প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যেই স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে কার্যকরী এই বিশেষ স্কিমটি সাধারণ জনগণের চর্চার মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। আর আপনিও যদি এই স্কিমের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করতে চান তবে আজকের এই পোস্টটি শুধুমাত্র আপনার জন্য।
কি এই বিশেষ স্কিম – এই স্কিমটি সম্পর্কে বিশদে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় যে, এই স্কিমের আওতায় আপনাকে প্রথমেই একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা ডিপোজিট করতে হয়, পরবর্তীতে ব্যাংক আপনাকে ওই টাকার প্রিন্সিপাল আম্যাউন্ট এবং সুদের ওপর নির্ভর করে প্রতি মাসে মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ফেরত দেবে। এক্ষেত্রে আপনি ৩ বছর, ৫ বছর, ৭ বছর এবং ১০ বছরের জন্য নিজের টাকা বিনিয়োগ করতে পারবন। ১০০০ টাকা থেকে আপনি এই স্কিমের অধীনে ডিপোজিট করতে পারবেন এবং এই স্কিমে সর্বোচ্চ কত টাকা বিনিয়োগ করা যেতে পারে তার কোনো ঊর্ধ্বসীমা রাখা হয়নি।

কত টাকা জমা করলে কত টাকা পাওয়া যাবে – স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে কার্যকরী এই স্কিম সম্পর্কে মূল যে প্রশ্নটি রয়ে যায় তা হল, কত টাকা জমা করলে কত টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। আর এই প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয় যে, এই স্কিমের অধীনে ফিক্সড ডিপোজিট -এর মতো একই হারে অর্থাৎ ৫.৪ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে। এর পাশাপাশি বয়সপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ০.৫% অধিক হারে সুদ প্রদান করা হয়। অন্যদিকে, আপনি যদি স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার এক্স-এমপ্লয়ী হয়ে থাকেন তবে আপনি অতিরিক্ত ১ শতাংশ সুদ পাবেন। এই স্কিমের অধীনে চক্রবৃদ্ধি সুদ প্রদান করা হয়ে থাকে ফলত আপনার ডিপোজিট করা অ্যামাউন্ট অনুসারে আপনি প্রত্যেক মাসে যথেষ্ট টাকা ফেরত পাবেন। অ্যানুইটি ক্যালকুলেটর ব্যবহার করেই আপনারা অত্যন্ত সহজেই জানতে পেরে যাবেন কত টাকা জমা করলে প্রতিমাসে আপনি কত টাকা ফেরত পাবেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, আপনি যদি ১৫ লক্ষ টাকা জমা করেন তবে প্রত্যেক মাসে আপনি ২৮,৫৬৬ টাকা ফেরত পেয়ে যাবেন।
রয়েছে আরও কতগুলি সুবিধা – উপরোক্ত সুবিধাগুলি ছাড়াও এই স্কিমের অধীনে আরো কতগুলি বিশেষ সুবিধা পাওয়া সম্ভব। আর এই স্কিমের বিশেষ সুবিধার কথা উল্লেখ করতে গেলে যে বিষয়টি উল্লেখ করতেই হবে তা হল লোন নেওয়ার সুবিধা। এই স্কিমের অধীনে আপনি যে টাকা বিনিয়োগ করবেন তার উপর নির্ভর করে আপনি লোনও নিতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এই স্কিমের অধীনে ডিপোজিট করার আপনি প্রিম্যাচিওর অবস্থাতেও টাকা উইথড্র করতে পারবেন। আবার কোনোক্ষেত্রে যদি বিনিয়োগকারী ব্যক্তির মৃত্যু হয় তবে কোনোরকম শর্ত ছাড়াই বিনিয়োগকৃত টাকা তার আইনগত উত্তরাধিকারী বা নমিনিকে ট্রান্সফার করা হয়। এমনকি প্রয়োজন অনুসারে এই স্কিমের অধীনে অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফারেরও ব্যবস্থা রয়েছে।
আরও পড়ুন – গাড়ির এই বিশেষ নথি না থাকলেই দিতে হবে ১০,০০০ টাকার জরিমানা। নতুন নিয়ম জারি করলো সরকার।
কারা স্কিম এর সুবিধা পাবেন – স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে কার্যকরী তথ্য অনুসারে, যেকোনো ভারতীয় নাগরিক এই স্কিমের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। এক্ষেত্রে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট এবং সিঙ্গেল একাউন্ট -এর মাধ্যমেও এই স্কিমের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। এছাড়াও এই স্কিমের অধীনে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে কোনো বয়সের সময়সীমা রাখা হয়নি। সুতরাং, যেকোনো বয়সী ব্যক্তি এই স্কিমের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। সুতরাং, আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে প্রত্যেক মাসে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা ফেরত পেতে চান তবে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার এই বিশেষ স্কিমটি আপনার জন্য একেবারে পারফেক্ট।