বাংলার পর ইংরেজি প্রশ্নপত্র ফাঁস হতেই নড়েচড়ে বসলেন পর্ষদ। রেজিষ্ট্রেশন বাতিল হলো ৮ জন পরীক্ষার্থীর।

গতকাল অর্থাৎ ২রা ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। অন্যান্য বছরের মতো এবছরো মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁস হবার সুযোগ রয়েছে তা আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিল পর্ষদ। সেকারণেই এবার প্রশ্নপত্রে ব্যবহার করা হয়েছে QR কোড। যাতে করে কেউ প্রশ্নপত্র ফাঁস করলেও খুব সহজে সেই ব্যাক্তি পর্যন্ত পৌঁছনো যায়। এতোকিছুর পরেও শেষ রক্ষা হলো না। পর পর দুদিন মাধ্যমিকের বাংলা এবং ইংরেজির প্রশ্নপত্র ফাঁস হলো।

প্রশ্নপত্র ফাঁস আটকাতে পর্ষদের নয়া হাতিয়ার:-

গত কিছু বছর ধরে লাগাতার মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁস হবার খবর আমাদের কানে এসেছে। এই সমস্যার কারণে বহুবার কাঠগড়ায় দাঁড় হতে হয়েছে পর্ষদকে। এবছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে এই সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে পর্ষদ একটি নতুন পদ্ধতি নিয়ে আসে। তারা প্রত্যেক খাতায় আলাদা আলাদা QR কোড ব্যবহার করে। যাতে কোনো পরীক্ষার্থী প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিলেও সেই ছবির প্রশ্নে থাকা QR কোড থেকে অনায়াসে সেই পরীক্ষার্থীকে খুঁজে বের করা যায়।

পরীক্ষামাধ্যমিক
পরীক্ষা শুরু২/২/২০২৪
পরীক্ষা শেষ১২/০২/২০২৪
অফিসিয়াল ওয়েবসাইটলিঙ্ক

এই QR কোড কিভাবে কাজ করে?

প্রত্যের প্রশ্নপত্রের মধ্যে এমনকি প্রত্যেকটি প্রশ্নের পাশে আলাদা আলাদা QR কোড ব্যবহার করেছে পর্ষদ। এই QR কোড স্ক্যান করলে একটি ইউনিক নাম্বার পাওয়া যায়। পর্ষদ এই ইউনিক নাম্বার দেখেই কোন স্কুলের কোন স্টুডেন্ট এই কাজটি করেছে সেটা অনায়াসে খুঁজে বের করে নিতে পারে। বর্তমান প্রযুক্তিকে এত সুন্দর ভাবে পর্ষদ কাজে লাগিয়েছে যে অনেক বিশেষজ্ঞই তাদের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে।

কোন জেলা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।

গতকাল অর্থাৎ বাংলা পরীক্ষার দিন মালদা জেলার একটি স্কুল থেকে এবং আজ দ্বিতীয় পত্র অর্থাৎ ইংরেজি পরীক্ষার দিন সেই একই জেলা মালদার এক স্কুল থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। পরীক্ষা শুরু হবার পর বাংলা প্রশ্নপত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পরতেই পর্ষদ তাদের আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে QR কোড স্ক্যান করার মাধ্যমে মাত্র এক ঘন্টার মধ্যে দুজন ছাত্রকে খুঁজে বের করে যারা বাংলা প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছিল।

Important Update Madhyamik Examination

ঠিক একইভাবে আজ ইংরেজি পরীক্ষা শুরু হবার সামান্য কিছুক্ষনের মধ্যেই ইন্টারনেটে ইংরেজি প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ে, কিন্তু গতকালের QR কোডের ব্যাপারটি অভিযুক্তরা এড়িয়ে যাবার জন্য QR কোডের ওপর লাল কালি দিয়ে মার্ক করে দিয়েছিল। কিন্তু তবুও পর্ষদের আধুনিক প্রযুক্তি অভিযুক্তদের খুঁজে বের করে।

অভিযুক্তদের কি শাস্তি দেওয়া হয়েছে?

মাধ্যমিক ছাত্রজীবনের প্রথম বড়ো পরীক্ষা, এই পরীক্ষায় এত বড়ো ভুল পর্ষদ কোনোভাবেই ক্ষমার চোখে দেখেননি। তাই পর্ষদের তরফে বাংলা পরীক্ষার দিন অর্থাৎ গতকাল দুইজন অভিযুক্তের এবং আজ অর্থাৎ ইংরেজি পরীক্ষার দিন ৬ জন অভিযুক্তের মাধ্যমিকের রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করে দেওয়া হয়। তারা আর এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারবে না।

আরও পড়ুন:- সরকারের এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ মোবাইলে থাকলে সমস্ত কাজ হবে সহজ

প্রশ্নফাঁস নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কি বক্তব্য?

প্রশ্নফাঁস নিয়ে পর্ষদ সভাপতি জানান, আমরা নির্বিঘ্নে পরীক্ষা শেষ করতে চাচ্ছি কিন্তু তারপরও প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। আমরা এই নিয়ে বিস্তারিত ঘেঁটে দেখার চেষ্টা করছি। তিনি আরো জানান মালদা জেলা থেকেই দুবার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এর পেছনে কোনো সংগঠনের হাত থাকতে পারে।

Leave a Comment