সরকারি চাকরি না থাকলেও মিলবে পেনশন, আবেদন করুন কেন্দ্রীয় সরকারের এই বিশেষ যোজনায়।

এবারে সরকারি চাকরি না থাকলেও মিলবে পেনশন। আজ্ঞে হ্যাঁ, সরকারি চাকরিজীবীরা যেমন অবসর গ্রহণের পর একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা পেনশন হিসেবে পেয়ে থাকেন, ঠিক তেমনভাবেই ব্যবসাদার কিংবা বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিরাও পাবেন পেনশন। আর এই পেনশন পাওয়া যাবে কেন্দ্রীয় সরকারের অটল পেনশন যোজনার মাধ্যমে। এই যোজনায় বিনিয়োগ করার মাধ্যমে আপনি প্রত্যেক মাসে ৫০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত রিটার্ন পেয়ে যাবেন। আর আজকের এই প্রতিবেদনটি পড়লেই আপনি অটল পেনশন যোজনা এবং এই যোজনায় আবেদনের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি অটল পেনশন যোজনার সুবিধা সমূহ এবং কত টাকা বিনিয়োগ করলে কত টাকা রিটার্ন পাওয়া সম্ভব তা সংক্রান্ত তথ্যও এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

যোজনা সম্পর্কে বিস্তারিত: ক্ষমতায় আসার পর কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সমগ্র ভারতের সাধারণ জনগণের জন্য অটল পেনশন যোজনা কার্যকর করা হয়েছিল। মূলত ভারতীয় নাগরিকরাই এই যোজনার আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হয়ে থাকেন। যদিও এক্ষেত্রে ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী ব্যক্তিরাই কেবলমাত্র অটল পেনশন যোজনার আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। আর এই যোজনায় নাম নথিভুক্তকরণের মাধ্যমে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা বিনিয়োগ করে আপনিও ৬০ বছর বয়সের পর প্রত্যেক মাসে ৫,০০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত পেনশন পেয়ে যাবেন।

অটল পেনশন যোজনা সুবিধা:
১. যে ব্যক্তি অটল পেনশন যোজনার অধীনে পেনশন পাচ্ছেন তার মৃত্যু ঘটলে তার স্ত্রীও একই পরিমাণ টাকা পেনশন পাবেন। শুধু তাই নয় বিনিয়োগকারী ব্যক্তি এবং তার স্ত্রী উভয়ই মারা গেলে, বিনিয়োগকারীর আইনসম্মত উত্তরাধিকারী বা নির্বাচিত কোন ব্যক্তি অটল পেনশন যোজনা সুবিধা পাবেন।
২. অটল পেনশন যোজনার আওতাধীন গ্রাহকরা 80C ধারায় করের ক্ষেত্রে ছাড় পেয়ে থাকেন।
৩. ৬০ বছর বয়সের পূর্বে যদি বিনিয়োগকারীর মৃত্যু ঘটে তবে তার স্ত্রী বিনিয়োগকৃত আমানত অনুসারে প্রত্যেক মাসে নির্দিষ্ট অংকের টাকা পেনশন হিসেবে পাবেন।

আরও পড়ুন: স্কুল ফাঁকি দেওয়ার দিন শেষ, ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে ঢুকলে কিংবা বেরোলে অভিভাবকের ফোনে আসবে SMS

কত টাকা বিনিয়োগ করলে কত টাকা পাওয়া যাবে: অটল পেনশন যোজনার অধীনে আপনি যদি ১৮ বছর বয়স থেকে বিনিয়োগ করতে শুরু করেন তবে ৬০ বছর বয়সের পর আপনি সর্বোচ্চ ৫,০০০ টাকার পেনশন পাবেন। কিন্তু অটল পেনশন যোজনার অধীনে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের নামই যদি নথিভুক্ত থাকে তবে ৬০ বছর বয়সের পর একত্রে ১০,০০০ টাকা পেনশন পাওয়া সম্ভব। আর পেনশনের প্রসঙ্গে যে বিষয়টি উল্লেখ করতে হয় তা হলো, আপনি যদি ১৮ বছর বয়স থেকে প্রত্যেক মাসে ৪২ টাকা করে বিনিয়োগ করেন তবে আপনি ৬০ বছর বয়সের পর ১,০০০ টাকা পেনশন পাবেন।

২০০০ টাকা পেনশন পাওয়ার জন্য প্রত্যেক মাসে ৮৪ টাকা এবং ৩০০০ টাকা পেনশন পাওয়ার জন্য প্রতিমাসে ১২৬ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে, ৪০০০ টাকা পেনশন পাওয়ার জন্য ১৬৮ টাকা এবং ৫০০০ টাকা পেনশন পাওয়ার জন্য প্রত্যেক মাসে ২১০ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে জানিয়ে রাখি যে, এটি একটি বিনিয়োগ ভিত্তিক স্কিম, সুতরাং আপনি যে বয়সে বিনিয়োগ করা শুরু করছেন এবং পেনশন হিসেবে আপনি যত টাকা পেতে চাইছেন তার ওপর নির্ভর করেই এই স্কিমের আওতায় বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারিত হবে।

Atal Pension Yojana (অটল পেনশন যোজনা)

আবেদনের প্রক্রিয়া: যে ব্যাংকে আপনার অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেই ব্যাংকে গিয়েই আপনি অটল পেনশন যোজনার আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই অটল পেনশন যোজনার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট-এ যেতে হবে। এরপর অটল পেনশন যোজনার আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আবেদন পত্র ডাউনলোড করে, তা পূরণ করে আবশ্যক নথি সহকারে ব্যাঙ্কে জমা করার মাধ্যমে আপনি এই যোজনার আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। প্রসঙ্গক্রমে জানিয়ে রাখি যে, আপনি ব্যাংক থেকেও অটল পেনশন যোজনার আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আবেদন পত্রটি পেয়ে যাবেন। আবেদনের প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করলেই ৬০ বছর বয়সের পর আপনি প্রতি মাসে ৫,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকার পেনশন পেয়ে যাবেন।

অফিসিয়াল ওয়েবসাইট – Link