দুর্নীতি দমনে নেমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক টাকার পাহাড় উদ্ধার করছে ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোনক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হচ্ছে তা জানতে রীতিমতো উৎসুক হয়ে উঠেছে সমগ্র ভারতের সাধারণ জনগণ। আর তাতেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উদ্ধার হওয়া কয়েকশো কোটি টাকা কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হবে তা নিয়ে বড় ঘোষণা সামনে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর এক সাক্ষাৎকার অনুসারে আগামী দিনে এই দুর্নীতির টাকা দেশের দরিদ্র জনসাধারণের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া যায় নাকি তা নিয়ে ভেবে দেখছে সরকার। আজকের এই প্রতিবেদনটি পড়লেই আপনি প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা এবং এই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা সম্পর্কে সমস্ত প্রকার তথ্য জানতে পারবেন।
উদ্ধার হওয়া টাকা পাবে দরিদ্র মানুষেরা: ইন্ডিয়া টুডে -তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরে কথা বলেন আর সেই প্রসঙ্গেই তিনি উল্লেখ করেন যে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইডির তরফে প্রচুর পরিমাণ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, আর সেই টাকা দেশের গরীব মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া যায় কিনা তা নিয়েই ভাবনা চিন্তা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিন তিনি আরো বলেন যে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এই সমস্ত টাকা গচ্ছিত করা হয়েছিল, আর তাতেই তার অন্তর থেকে মনে হচ্ছে যে, এই টাকাগুলি গরিব মানুষকে ফিরিয়ে দেয়া প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: রাজ্যের প্রত্যেক মহিলা প্রতিদিন পাবে ১০০ টাকা। ঘোষণা সরকারের।
দুর্নীতির শিকার সাধারণ মানুষ: প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি তার সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন যে, দুর্নীতির কারণে বারংবার ভুক্তভোগী হতে হয়েছেন সাধারণ মানুষকে, তা সে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রের দুর্নীতি হোক অথবা বিহারের জমি দুর্নীতি কিংবা কেরলের ব্যাংক দুর্নীতি। এদিন তিনি আরো বলেন যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সহজ সরল সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে রাজনৈতিক নেতারা সেই টাকায় বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রেও যেমনভাবে সাধারণ মানুষকে ঠকানো হয়েছে, ঠিক তেমনভাবেই কেরলের কমিউনিস্ট পার্টি নিয়োজিত কোঅপারেটিভ ব্যাংকের ক্ষেত্রেও টাকা হারিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
শুধু তাই নয়, এদিন তিনি প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের নাম উল্লেখ করে বলেন, লালুজি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন গরীব মানুষের চাকরির বিনিময়ে তাদের জমি নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছেন, যার জেরে বহু গরিব মানুষ নিজেদের শেষ সম্বলটুকু হারিয়েছেন। ফলত সমগ্র দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দরিদ্র, অসহার মানুষকে ঠকিয়ে প্রচুর টাকার প্রতারণা করেছেন রাজনৈতিক নেতারা আর সেই সমস্ত টাকা গরিব মানুষের কাছে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়াই উচিত হবে বলে মনে করছেন তিনি। সুতরাং আগামী দিনে সমগ্র দেশের সাধারণ মানুষের লক্ষ্মীলাভ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে: এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানান যে, সমগ্র দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোট ১.২৫ লক্ষ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আর এই টাকা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার জন্য যদি আইনগত কোনোরূপ পরিবর্তন আনতে হয় তবে তিনি তাও আনার চেষ্টা করবেন। এই বিষয়টি নিয়ে তিনি ইতিমধ্যেই লিগ্যাল টিমের সাথে কথা বলেছেন। ন্যায় সংহিতায় এই নিয়ে বেশ কিছু ধারা রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।