বিগত ২২ শে এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের অনুসারে এসএসসি দুর্নীতির কারণে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা হয়। আর তারপরই কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল এসএসসি এবং পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তবে এবারে সুপ্রিম কোর্টের তরফেও এসএসসি কাণ্ডের রায় প্রকাশ করা হলো। আজকের এই প্রতিবেদনটি পড়লেই আপনারা এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের তরফে কি রায় দেওয়া হয়েছে, কতজন শিক্ষককে অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে, এসএসসি -এর তরফে প্রকাশিত পিডিএফে কি কি উল্লেখ করা হয়েছে, ভবিষ্যতে এই ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি থাকবে কিনা তা সংক্রান্ত সমস্ত প্রকার তথ্য জানতে পারবেন।
কী বলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে: বিগত মঙ্গলবার অর্থাৎ ৭ই মে ২০২৪ তারিখে হাইকোর্টের রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। অর্থাৎ হাইকোর্টের তরফে যে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা হয়েছিল তাদের চাকরি আপাতভাবে বহাল থাকছে। তবে চাকরিক্ষেত্রে বহাল থাকার জন্য বেশ কতগুলি শর্ত আরোপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এর পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের তরফে আরো জানানো হয়েছে যে, এসএসসি যদি যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের বিভাজন না করতে পারে তবে ২০১৬ সালের চাকরিপ্রার্থীদের গোটা প্যানেল বাতির করা কোনভাবেই ন্যায্য নয়। ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করা হলে তার অভিঘাত ছাত্র-ছাত্রী এবং বিদ্যালয়গুলির উপর এসে পড়বে, যা কোনভাবেই এড়ানো সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: ঐক্যশ্রী স্কলারশিপে আবেদন করলেই পাওয়া যাবে ৩৩ হাজার টাকা। আবেদন পদ্ধতি জেনে নিন।
কি কি শর্ত আরোপ করা হয়েছে: যে সমস্ত শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করা হয়েছিল তাদের উদ্দেশ্যে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়েছে যে, এই সমস্ত শিক্ষকদের মুচলেকা দিয়ে জানাতে হবে যে ভবিষ্যতে যদি তারা অযোগ্য বলে বিবেচিত হন তবে হাইকোর্টের নির্দেশ মাফিক তাদের চাকরি বাতিল হবে এবং সমস্ত বেতন ১২% সুদ সহকারে ফেরত দেবেন। এর পাশাপাশি আরো জানানো হয়েছে যে, এসএসসির তরফে যদি যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের আলাদা করা সম্ভব হয় তবে যে সমস্ত প্রার্থীরা অযোগ্য বলে প্রমাণিত হবে তাদের এখনই ১২ শতাংশ সুদ সহকারে সমস্ত বেতন ফেরত দিতে হবে না। আগামী ১৬ ই জুলাই ২০২৪ তারিখে সুপ্রিম কোর্টের তরফে চূড়ান্ত রায় দান করা হবে এবং ওই দিনই অযোগ্য প্রার্থীদের কি শাস্তি দেওয়া হবে তা নির্ধারণ করা হবে।
যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের সংখ্যা কত: সুপ্রিম কোর্টে CBI কে উদ্ধৃত করে জানিয়েছিল যে, ৫২৫০ জন প্রার্থীকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে পুনরায় সিবিআইকে উদ্ধৃত করে জানানো হয় যে, ২০১৬ সালে বেআইনিভাবে ৮৮৬১ জনের নিয়োগ হয়েছে। আর এই প্রসঙ্গে SSC -এর তরফে এক বিশেষ পিডিএফ প্রকাশ করা হয়েছে।

কী বলা হয়েছে এই পিডিএফে: SSC -এর তরফে জারি করা এই পিডিএফে OMR ইস্যু এবং র্যাঙ্ক জাম্পের মাধ্যমে কতজন শিক্ষকের নিয়োগ হয়েছে তাদের সংখ্যাও প্রকাশ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে বেআইনিভাবে নিযুক্ত শিক্ষকদের নাম, রোল নম্বর এবং সাবজেক্ট সহকারে এটি দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। অবৈধভাবে নিযুক্ত শিক্ষকদের পাশাপাশি গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের সংখ্যা এবং নামও প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, IX ও X এর ১৮৩ জন এবং XI ও XII -এর ৩৯ জন শিক্ষকের র্যাংক জাম্পের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে, OMR ইস্যুতে IX ও X এর ৯৫২ জন এবং XI ও XII -এর ৯০৭ জন শিক্ষকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, OMR ইস্যুতে গ্রুপ সি -এর ৩৪৮০ জন এবং গ্রুপ ডি -এর ২৮২৩ জন চাকরিপ্রার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও এখনো পর্যন্ত এই তালিকার সত্যতা প্রমাণিত হয়নি পরবর্তীতে ১৬ ই জুলাই সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে এই তালিকা এবং কতজন অযোগ্য প্রার্থী নিযুক্ত হয়েছেন তা নির্ধারিত হবে।
অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা: Link