পশ্চিমবঙ্গের টোটো চালকদের জন্য নতুন নীতি ঘোষণা পরিবহন দপ্তরের, কোন কোন নিয়ম বিধি ঘোষনা করা হলো!
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জেলায় বর্তমানে যাতায়াতের এক সহজ মাধ্যম হলো টোটো। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরপ্রান্তে চলাচলের জন্য এই টোটো হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ জনের কাছে সহজ পরিবহন মাধ্যম। টোটোর দুই পাস খোলা থাকার জন্য মানুষজনের বসার সুবিধায় যেমন হয় তেমনই খোলা বাতাস গায়ে লাগে, এর জন্যই টোটোতে করে যাতায়াত করতে সাধারণ মানুষদের সুবিধাজনক এবং আরামদায়ক মনে হয়। এজন্যই টোটোর দৌরাত্ম দিন দিন বেড়িয়ে চলেছে। অনেক টোটোকে আমরা দেখতে পাই, এক রুটের টোটো অন্যরুটে চলাচল করছে। অনেক সময় বেশি টাকা উপার্জনের লোভে টোটো চালকরা নিজেদের নির্দিষ্ট রুট বাদ দিয়েও ভিন্ন রুটের যাত্রীও তুলে থাকে। এইজন্য পরিবহন দপ্তর তরফে এক বিশেষ নিয়ম-নীতি জারি করা হলো টোটো চালকদের উদ্দেশ্যে। পশ্চিমবঙ্গের টোটো চালকদের জন্য এই নিয়ম নীতি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। দেখে নেওয়া যাক পরিবহন দপ্তর সূত্রে টোটো চালকদের উদ্দেশ্যে নতুন কোন নিয়ম নীতি জারি করা হয়েছে:-
পশ্চিমবঙ্গের পরিবহন দপ্তর সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেকটি টোটো চালক কে? একটি নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন ফর্ম ফিলাপ করতে হবে। এবং এই রেজিস্ট্রেশন করাকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, প্রতিটির টোটোকে দেওয়া হবে একটি নির্দিষ্ট প্লেট নম্বর এবং তাতে থাকবে নির্দিষ্ট কিউআর কোড। এই কিউআর কোড স্ক্যান করলে বোঝা যাবে টোটো টি নির্দিষ্ট রুট বাদ দিয়ে অন্য কোন রুটে যাত্রী তুলছে কিনা।
এছাড়া আরো নিয়ম জারি করা হয়েছে, তার মধ্যে হল কোন জাতীয় ও রাজ্যসড়কে টোটো নিয়ে চলাচল করা যাবে না। এমন করা নির্দেশনা দেওয়া হল পরিবহন দপ্তরের তরফে।
এক ব্যক্তির নামে একটি মাত্র রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। একজনের অনেকগুলো রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকলে একটি বাদ দিয়ে অন্যগুলো বাতিল করে দেওয়া হবে।
শুধু তাই নয়, এতদিন পর্যন্ত টোটো চালকদের কাছ থেকে কোন কর আদায় করা হত না রাজ্য সরকারের তরফে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী টোটো চালকদের ওপর রাজস্ব কর আরোপ করা হবে, যার ফলে টোটো চালকদের কাছ থেকে বার্ষিক কর নেওয়া হবে। এর ফলে রাজ্যের রাজকোষে কিছুটা অর্থ আসবে।
বিশেষ করে পুজো আর কয়েক দিনের অপেক্ষা। শারদ উৎসবে রাস্তাঘাটে জোনজোয়ার দেখা যায়। এ জনজোয়ারের মধ্যে টোটো ঢুকে পড়ায় অনেক ভোগান্তি পড়াতে হয় ট্রাফিক পুলিশদের। দুর্গাপুজোর প্রাক মুহূর্তেই এমনই করা নির্দেশনা দেওয়া হল পরিবহন দপ্তরের তরফে। ১১ পাতার এই নির্দেশনায় স্পষ্ট করা হয়েছে নির্দিষ্ট রুট ব্যতীত অন্য কোন রুটে গাড়ি চালানো যাবে না। এতদিন পর্যন্ত গ্রামও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে টোটো চালকদের দৌরাত্ম ছিল অনেক। যেহেতু পরিবহন দপ্তরের তরফে কোন বিধি নিষেধ কার্যকরী করা হয়নি এতদিন, তাই এই বিষয়ে কোন বাধা দেওয়া যায়নি। তবে এইবার কঠোর হাতে রাশ টানলেন পশ্চিমবঙ্গের পরিবহন দপ্তর।
আরোও পড়ুন:- বাংলার বাড়ি প্রকল্পের দ্বিতীয় দফার PWL তালিকা প্রকাশ করা হলো, কবে থেকে টাকা দেওয়া শুরু।
প্রশাসন জানিয়েছেন, বর্তমানে যে সমস্ত টোটো গুলি রাস্তায় চলাচল করে তার বেশিরভাগ গুলি বেআইনি। এই টোটো গুলোকে সম্পূর্ণরূপে উঠিয়ে দিয়ে ই-রিক্সা আনা হবে। তবে প্রক্রিয়া এখনই কার্যকরী করা হবে না। প্রশাসন মহলে অনেক রকম মিটিং আলোচনার পরে ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়া কার্যকরী করা হবে।
কিছুদিন আগেও পরিবহন দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছিল, রাজ্য সরকার ও জাতীয় সড়কে টোটো না চালানোর জন্য। তবে এই কথায় কোন কর্ণপাত করেননি টোটো চালকরা। এ সমস্ত তিন চাকার গাড়ির জন্য অনেক পণ্যবাহী গাড়ি, স্কুল বাস, ইমারজেন্সি গাড়ি যাতায়াতে অসুবিধা হয়। এর ফলে যাত্রীদেরও যাতায়াতে অনেকটাই সমস্যা হয়। যাত্রী সুরক্ষার স্বার্থেই রাজ্য পরিবহন দপ্তরের তরফে ঘোষনা করা হয়েছিল, তবে এই কথায় কে মান্যতা না দেওয়ায় এইবার পুরোপুরি নির্দেশনা জারি করা হলো।
সম্প্রতি, জেলা প্রশাসন, পুরসভা, পরিবহন দপ্তর, টোটো সংগঠন এবং পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। এই বৈঠকের মাধ্যমে আলাপ আলোচনার পরেই টোটো চালকদের রূপ নিয়ন্ত্রণ নিয়ম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মূল কারণ রাস্তায় যানজট কমানো, যাত্রী সুরক্ষা প্রদান করা, কর আরবের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করা। এছাড়া এই নিয়ম চালু হওয়ার মাধ্যমে টোটো চালকদের মধ্যেও নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং রাস্তায় যানজট কমার ফলে অনেক সমস্যার সমাধান ঘটবে।




