সদ্যই রাজ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে আর আগামী দিনে যথেষ্ট দ্রুততার সঙ্গে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট প্রকাশ করার সংকল্পে অটল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তবে মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিকের পর পর্যাপ্ত টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারছে না এমন ছাত্র-ছাত্রীর নজির বারংবার উঠে এসেছে সংবাদের শিরোনামে। আর রাজ্যব্যাপী শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারে তার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে বিভিন্ন প্রকার স্কলারশিপ কার্যকর করা হয়েছে যার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য একটি স্কলারশিপ হল ওয়েসিস স্কলারশিপ।
স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত : পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর অর্থাৎ তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত ছাত্র-ছাত্রী এবং ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই রাজ্য সরকারের তরফে ওয়েসিস স্কলারশিপ কার্যকর করা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যথাযথ সচেতনতা এবং দারিদ্রতার কারণে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা বারংবার শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে, আর তাতেই এই সমস্ত শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারে এবং নিজেদের উন্নতিসাধন করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্যই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ওয়েসিস কলারশিপ কার্যকর করা হয়েছে
আবেদনের ক্ষেত্রে অবশ্য যোগ্যতা :
১. রাজ্য সরকারের তরফে জারি করা তথ্য অনুসারে কেবলমাত্র তপশিলি জাতি এবং উপজাতিভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীরা এবং ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত শিক্ষার্থীরা অর্থাৎ পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন।
২. এই স্কলারশিপের আওতায় নাম নথিভুক্তকরণের ক্ষেত্রে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর পরিবারের বাৎসরিক আয় ২,৫০,০০০ টাকার তুলনায় কম হতে হবে।
৩. যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা মাধ্যমিকের ন্যূনতম ৫০ শতাংশ কিংবা তার বেশি নম্বর নিয়ে উত্তীর্ণ হবে তারাই কেবলমাত্র এই স্কলারশিপের আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্তকরণের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।
৪. এই স্কলারশিপের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারী শিক্ষার্থী নিজস্ব ব্যাংক একাউন্ট থাকা অবশ্যক।
প্রসঙ্গক্রমে জানিয়ে রাখি যে, শুধুমাত্র একাদশ কিংবা দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরাই যে এই স্কলারশিপের সুবিধা পাবেন তা নয় এক্ষেত্রে নবম শ্রেণী থেকে শুরু করে পিএইচডির স্তরে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীরাও এই স্কলারশিপের আওতায় অনুদান পেয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন : নতুন নিয়ম অনুযায়ী একদিনে এটিএম কার্ডের মাধ্যমে সর্বোচ্চ কত টাকা তোলা সম্ভব?
অনুদানের পরিমাণ : ওয়েসিস স্কলারশিপের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে যে, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত তপশিলি জাতিভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীরা প্রত্যেক বছরে ২,৫০০ টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন। অন্যদিকে তপশিলি উপজাতিভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতি মাসে ২৩০ টাকা করে অর্থাৎ এক বছরে ২৭৬০ টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি বছরে ৫০০০ টাকার অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। ওয়েসিস স্কলারশিপের আওতায় কোনো ছাত্র অথবা ছাত্রী কত টাকার অনুদান পাবেন তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে ছাত্র কিংবা ছাত্রী কোন কোর্সের অধীনে পড়াশোনা করছেন তার উপরে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কোর্সের ওপর নির্ভর করে ছাত্র-ছাত্রীদের সর্বনিম্ন ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে ২৮,০০০ টাকা পর্যন্ত অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে।
আবেদনের ক্ষেত্রে আবশ্যক নথি :
পরিবারের বাৎসরিক আয়ের সার্টিফিকেট
পাসপোর্ট সাইজের ছবি
কাস্ট সার্টিফিকেট
বয়সের প্রমাণপত্র
সর্বশেষ পরীক্ষার মার্কশীট
আধার কার্ড
খাদ্যসাথী কার্ড
ব্যাংকের পাস বইয়ের জেরক্স কপি
বয়সের প্রমাণপত্র
ভর্তির রশিদ

আবেদনের প্রক্রিয়া : বর্তমানে আপনি বাড়িতে বসেই নিজস্ব মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওয়েসিস স্কলারশিপের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ওয়েসিস স্কলারশিপের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্তকরণের জন্য আপনাকে ওয়েসিস স্কলারশিপের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটএ যেতে হবে এবং আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | Link |