গাড়ির এই বিশেষ নথি না থাকলেই দিতে হবে ১০,০০০ টাকার জরিমানা। নতুন নিয়ম জারি করলো সরকার।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আইন অনুসারে রাস্তায় গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে গাড়ি সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র থাকা অত্যন্ত জরুরী। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সমস্ত নথিপত্র না থাকলে গাড়ির মালিককে যথেষ্ট জরিমানা দিতে হয়। আর গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, লাইসেন্স -এর মতোই অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি হলো পলিউশন সার্টিফিকেট। যদিও এই সকল নথিপত্র ছাড়াই গাড়ি চালানো হচ্ছে এমন ঘটনার নজির সমগ্র দেশজুড়ে বারংবার উঠে এসেছে। আর তাতেই গাড়ির নথিপত্র সংক্রান্ত কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলো। ইতিমধ্যেই গাড়ির পলিউশন সার্টিফিকেট -এর সঙ্গে সম্পর্কিত এমন এক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে যার কারণে সর্বোচ্চ ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে।

পলিউশন সার্টিফিকেট কি – গাড়ির পলিউশন সার্টিফিকেট সংক্রান্ত এই বিশেষ নিয়ম সম্পর্কে জানতে হলে আগে পলিউশন সম্পর্কে জানতে হবে। আর সেই প্রসঙ্গে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় বায়ু দূষণের কথা। সময় যতই এগোচ্ছে সমগ্র ভারত তথা বিশ্বব্যাপী নানাবিধ যানবাহনের সংখ্যা ততই বাড়ছে। আর এই বেড়ে চলা যানবাহন এবং কলকারখানার খাতিরে পরিবেশ দূষণ তথা বায়ু দূষণের পরিমাণও অত্যন্ত হারে বাড়ছে। স্বভাবতই রাস্তায় যে সমস্ত যানবাহন এবং গাড়ি চলে তার ধোঁয়া বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ। যার ফলস্বরূপ দূষণ নিয়ন্ত্রণের খাতিরে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, আর এমনই এক বিশেষ পদক্ষেপ হলো গাড়ির পলিউশন সার্টিফিকেট। মূলত পলিউশন টেস্টিং সেন্টারে গাড়ির কার্বন নিঃসরণের মাত্রা পরীক্ষার পর এই সার্টিফিকেট দেওয়া হয়ে থাকে। আর এই সার্টিফিকেট থেকে প্রমাণিত হয় যে, আপনার গাড়ি পরিবেশের কোনোরূপ ক্ষতি করছে না।

Pollution Certificate

কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে – দিল্লি ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন -এর তরফে জারি করা এক নির্দেশিকার মাধ্যমে সমগ্র দিল্লির জনগণের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছে যে, আগামী দিনে খুব শীঘ্রই সমগ্র দিল্লির পেট্রোল পাম্পগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর হবে। মূলত যেসমস্ত যানবাহনগুলি ভ্যালিড পলিউশন সার্টিফিকেট ছাড়াই চলছে তাদের চিহ্নিত করার জন্যই এইরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, এমনটাই জানানো হয়েছে এই নির্দেশিকায়। যদি কোনো পেট্রোল পাম্পে এক্সপায়ার্ড পলিউশন সার্টিফিকেটযুক্ত যানবাহন পাওয়া যায় তবে উক্ত পেট্রোল পাম্পের কর্মীরা এই বিষয়ক তথ্য গাড়ির মালিকের কাছে পৌঁছে দেবেন, শুধু তাই নয় পেট্রোল পাম্পে যে স্ক্রিন থাকবে তার মাধ্যমেও পলিউশন সার্টিফিকেট সংক্রান্ত তথ্য গাড়ির মালিকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। তিন ঘন্টা পর সিস্টেম পুনরায় উক্ত ব্যক্তির গাড়ির পলিউশন সার্টিফিকেট স্ট্যাটাস চেক করবে, এমনটাই জানা গিয়েছে উক্ত নির্দেশিকা প্রকাশিত তথ্য মারফত।

আরও পড়ুন – যত ইচ্ছা নোট ছাপানো সম্ভব নয় কেন, জেনে নিন এখনই।

জরিমানা – দিল্লি ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন -এর তরফে জারি করা এই নির্দেশিকায় আরো জানানো হয়েছে যে, প্রথমবার ভ্যালিড পলিউশন সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো গাড়িকে আটক করা হলে ১,০০০ টাকা জরিমানা করা হবে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বার উক্ত গাড়িটিকে আটক করা হলে ২,০০০ টাকার জরিমানা নেওয়া হবে। আর এইভাবে সর্বাধিক ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা লাগু করা হতে পারে বলেই জানানো হয়েছে।

এই নিয়ম জারি হবে সমগ্র ভারতবর্ষে – বায়ু দূষণ রোধ করার জন্য দিল্লি সরকারের তরফে এই বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরই আগামী দিন সমগ্র ভারতবর্ষে এই একই নিয়ম কায়েম করা হবে কিনা তা জানতে রীতিমতো উৎসুক হয়ে উঠেছেন সমগ্র ভারতের আমজনতা। আর সেই প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয় যে, আগামী দিনে সম্পূর্ণ ভারতে এই একই নিয়ম কার্যকর হবে কিনা তা সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত কোনো তথ্য ভারত সরকারের তরফে জানানো হয়নি, তবে খুব শীঘ্রই সমগ্র ভারতব্যাপী বায়ুদূষণ রোধ করার জন্য গাড়ির পলিউশন সার্টিফিকেট সংক্রান্ত এই একই নিয়ম কার্যকর করা হবে বলেই আশা রাখছেন রাজনৈতিক মহলের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা।