ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে এক বিশেষ কেন্দ্রীয় পোর্টাল চালু করা হলো। আর এবার থেকে এই পোর্টালের মাধ্যমেই সমগ্র রাজ্যে ছাত্র-ছাত্রীরা কোনরকম সমস্যা ছাড়াই সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কলেজের আওতাধীন নানাবিধ কোর্সে আবেদনের সুবিধা পেয়ে যাবেন।
চালু হলো কলেজে ভর্তির এক বিশেষ ওয়েবসাইট: এখন থেকে আর কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য বিভিন্ন কলেজের নানাবিধ ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কোন প্রয়োজন নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এমন এক বিশেষ সাইটের https://wbcap.in/ উদ্বোধন করলেন যার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা একই সঙ্গে ২৫ টি কলেজে ভর্তির জন্য আবেদন জানাতে পারবেন। এক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীরা একই কলেজের ভিন্ন ভিন্ন কোর্সের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন অথবা একই বা আলাদা আলাদা কলেজের ২৫ টি কোর্সের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন। এর পাশাপাশি আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে ছাত্র-ছাত্রীরা ১৬ টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৪৬১ টি কলেজের আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন একটি মাত্র পোর্টালের মাধ্যমে।
সুতরাং এখন থেকে কলেজে ভর্তি নিয়ে আর বিশেষ চিন্তার কোন কারণ নেই, উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই মাত্র একটি ক্লিকেই কলেজে ভর্তি হওয়ার একাধিক অ্যাপ্লিকেশন ফিল আপ করতে পারবেন রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে শুধু আবেদনে নয় কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে যে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয় তাও এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই প্রকাশ করবে বিভিন্ন কলেজগুলি। মূলত কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে বারংবার যে সমস্ত অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়েছিল তা সমাধানের জন্যই রাজ্য সরকারের তরফে ২০২২ সালে এই বিশেষ পোর্টাল লঞ্চ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কিন্তু ২০২২ কিংবা ২৩ সালে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি, আর তাতেই চলতি বছরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশের প্রায় ১ মাসের ব্যবধানে কলেজে ভর্তির জন্য এই বিশেষ ওয়েবসাইট চালু করল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারের তরফে চালু করা হলো নতুন প্রকল্প, এবার থেকে মিলবে ১২,৫০০ টাকার অনুদান।
এই পোর্টালের মাধ্যমে কিভাবে ভর্তি হওয়া সম্ভব: জানা গিয়েছে যে, রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এই পোর্টালের মাধ্যমে বিভিন্ন কলেজের আওতাধীন কোর্সগুলির জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে প্রথমেই আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীকে রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে আবেদনকারী শিক্ষার্থীকে নিজস্ব প্রোফাইল তৈরি করতে হবে এবং সেখানে নিজের সমস্ত তথ্য ও নথি সঠিকভাবে আপলোড করতে হবে। উপরোক্ত প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে তবেই ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন কলেজের আওতায় আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে যদি কোন ছাত্র-ছাত্রীর নাম একটি কলেজের মেধা তালিকায় থাকে তবে সেই ছাত্র বা ছাত্রী এই পোর্টালের মাধ্যমেই পেমেন্টের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে উক্ত কলেজে ভর্তি হতে পারবেন। শুধু তাই নয়, একটি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর অন্য একটি কলেজে ভর্তি হতে চাইলে প্রথম কলেজের ভর্তি ক্যান্সেল করে তার পছন্দসই কলেজ ভর্তি হতে পারবেন। তবে যদি নতুন কলেজটিতে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে উক্ত কলেজের ফি পূর্বের কলেজের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে তবে ওই ছাত্র বা ছাত্রীকে অতিরিক্ত টাকা জমা করতে হবে, আবার যদি নতুন কলেজের ফি পূর্বের তুলনায় কম হয় তবে অতিরিক্ত টাকা ছাত্র-ছাত্রীর একাউন্টে রিফান্ড হয়ে যাবে।
কবে থেকে রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে: রাজ্য সরকারের তরফে সমগ্র রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়েছে যে, আগামী ২৪ শে জুন তারিখ থেকে শুরু হতে চলেছে এবং তা আগামী ৭ জুলাই ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত চলবে। প্রসঙ্গক্রমে জানিয়ে রাখি যে, রাজ্য সরকারের তরফে ওয়েবসাইটের পাশাপাশি একটি অ্যাপও লঞ্চ করা হয়েছে যার মাধ্যমেও ছাত্র-ছাত্রীরা কলেজে ভর্তি হতে পারবেন।
এই পোর্টালের মাধ্যমে কোন কোন কলেজে ভর্তি হওয়া সম্ভব নয়: নবান্ন সূত্রের খবরে জানা গিয়েছে যে, এই পোর্টালের মাধ্যমে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, স্বশাসিত কলেজ, সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ল কলেজ, চারুকলা সংক্রান্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইঞ্জিনিয়ারিং, ফার্মাসি বা নার্সিং কলেজ, বেসরকারি কলেজে ভর্তি হওয়া সম্ভব নয়।
আবেদনের ক্ষেত্রে কোন কোন নথি প্রয়োজন হতে চলেছে: এই পোর্টালের মাধ্যমে আবেদনের ক্ষেত্রে যে যে নথি প্রয়োজন হতে চলেছে তা হল,
(১) উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট
(২) উচ্চ মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড
(৩) উচ্চ মাধ্যমিকের রেজিস্ট্রেশন কার্ড
(৪) মাধ্যমিকের রেজাল্ট
(৫) মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড
(৬) ছাত্র বা ছাত্রীর ব্যাংক একাউন্টের সমস্ত তথ্য
(৭) আধার কার্ড
(৮) আবেদনকারী ছাত্র বা ছাত্রীর ছবি