ফুড এসআই পরীক্ষা নিয়ে হাইকোর্টের বড়ো সিদ্ধান্ত। কি হতে চলেছে এই পরীক্ষার ভবিষ্যত।

রাজ্যের সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির মেঘ কাটিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছে আরো একবার আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছিল ফুড এসআই -এর নিয়োগ পরীক্ষাটি। তবে তাতেও সেই ভরাডুবিই হল। ফলত ফুড এসআই -এর পরীক্ষা নিয়ে সমগ্র রাজ্যব্যাপী যথেষ্ট বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগকে নজরে রেখে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে ফুড এসআই -এর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। যার জেরে সমগ্র রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ফুড এসআই নিয়োগের পরীক্ষা এবং পরবর্তীতে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নানাবিধ প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা ফুড এসআই পরীক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিকগুলি তুলে ধরতে চলেছি।

বিতর্কের কারণ: পাবলিক সার্ভিস কমিশনের তরফে ফুড এসআই পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলে প্রচুর সংখ্যক চাকরিপ্রার্থী উক্ত পদের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছিলেন। আর তাতেই পরীক্ষা পদ্ধতির সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের তরফে ১৬ এবং ১৭ই মার্চ এই দুদিনে একাধিক শিফটে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষার দিনই চাকরিপ্রার্থীরা অভিযোগ তোলেন যে পরীক্ষার প্রায় ১ ঘন্টা আগে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে গিয়েছে, এমনকি প্রচুর সংখ্যক পরীক্ষার্থীর হাতে সেই প্রশ্ন পৌঁছে গিয়েছে পরীক্ষার ঠিক পূর্বে। আর তাতেই ফুড এসআই নিয়োগের পরীক্ষাকে ঘিরে জলঘোলা হতে শুরু করে।

হাইকোর্টের নির্দেশ: ফুড এসআই নিয়োগের পরীক্ষা সংক্রান্ত যা যা অভিযোগ তোলা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের তরফে উক্ত পদের জন্য কর্মী নিয়োগের সম্পুর্ণ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পর্যাপ্ত তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে সিআইডি -এর উপরে। এক্ষেত্রে আরও জানা গিয়েছে যে, সিআইডি -এর তদন্ত অনুসারে ২২ শে মে তারিখের মধ্যে রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।

গুরুত্বপূর্ণ খবর: এখন গাড়ি চালাতে লাগবেনা কোনো লাইসেন্স। নতুন নিয়ম জেনে নিন।

নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যত: পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ফুড এসআই নিয়োগের পরীক্ষাকে ঘিরে চাকরিপ্রার্থীদের তরফে যা যা অভিযোগ তোলা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডির তরফে নিরপেক্ষ তদন্তের আশা রাখছেন চাকরিপ্রার্থীরা। আগামী দিনে এই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে যে বা যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তাদের পর্যাপ্ত শাস্তির আশাও রাখছেন তারা। তবে এই সমস্ত বিষয়টিকে কেন্দ্র করে প্রশ্নচিহ্ন উঠেছে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের উপরে। সমগ্র পরীক্ষা পদ্ধতিতে গোপনীয়তা না রাখতে পারার কারণে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপরেও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

শুধু তাই নয়, এই ঘটনা রীতিমতো হতাশা এবং ধন্ধের সৃষ্টি করেছে সমগ্র রাজ্যের চাকরিপ্রার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের মধ্যে। আগামী দিনে আদালতের হস্তক্ষেপে সমস্ত বিষয়টির সুরাহা হবে বলেই মনে করছেন রাজ্যের সাধারণ জনগণ। তবে চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ সঠিক প্রমাণিত হলে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের তরফে পরবর্তীতে কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত কোনো রূপরেখা প্রকাশে আনা হয়নি। অনেকেই মনে করছেন সিআইডি তদন্তে সমস্ত বিষয়টি প্রমাণিত হলে দোষীদের শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি পুনরায় ফুড এসআই নিয়োগের পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু সিআইডি তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দিনে পুনরায় ফুড এসআই নিয়োগের পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে কিনা তা সম্পর্কেও কোনোরূপ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের তরফে।